টাইম ট্রাভেল কি আসলেই সম্ভব? (প্রথম পর্ব)
টাইম ট্রাভেল
বুঝতে হলে আমাদের কিছুটা বিজ্ঞানীদের মতো চিন্তা করতে হবে। চলুন শুরু করা করা যাক। আমরা সাধারণত 3rd Dimension সম্পর্কে পরিচিত। দৈর্ঘ, প্রস্থ, উচ্চতা এই মিলে 3rd Dimension। আমরা
চাইলেই এই তিন দিকের যেকোন দিকে যেতে পারি। ধরা যাক আপনি রাস্তা দিয়ে মনের আনন্দে
সাইকেল চালাচ্ছেন। আপনি সোজা চলতে থাকলে আপনি x অক্ষ বাঁ দৈর্ঘ বরাবর চলছেন, আবার বায়ে বাঁ ডানে মোড় ঘুরলে
আপনি চলছেন y অক্ষে বাঁ প্রস্থ
বরাবর। এবার ধরুন আপনি একটি ব্রিজ পার হচ্ছেন, যেটি কিছুটা খাঁড়া উপড়ে উঠে গিয়েছে।
তবে এবার আপনি z অক্ষ বাঁ উচ্চতা
বরাবর চলছেন।
সময় কে ৪র্থ
ডায়মেনশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা যেভাবে 3rd Dimension এ চলা ফেরা করতে পারি, ৪র্থ ডায়মেনশনেও
কি তা করা সম্ভব?
টাইম ট্রাভেল
নিয়ে সাইন্স ফিকশন মুভি গুলো দেখলে আপনি খেয়াল করবেন সেখানে বড় বড় কিছু মেশিন দিয়ে
রাস্তা বানানো থাকে। যার মধ্যে দিয়ে কেউ গেলে সে টাইম ট্রাভেল করে ফেলে।
এই পথের নাম দেয়া হয়েছে “Wormhole”। আসলে কি এই “Wormhole” বানানো সম্ভব? সত্য হচ্ছে, এই “Wormhole” আমাদের চারিদিকেই আছে। কিন্তু তা অনেক ক্ষুদ্র বলে আমরা দেখতে পারিনা।
এই পথের নাম দেয়া হয়েছে “Wormhole”। আসলে কি এই “Wormhole” বানানো সম্ভব? সত্য হচ্ছে, এই “Wormhole” আমাদের চারিদিকেই আছে। কিন্তু তা অনেক ক্ষুদ্র বলে আমরা দেখতে পারিনা।
এ পৃথিবীতে কিছুই সমতল অথবা মসৃণ নয়। আপনি যদি অনেক কাছ থেকে কোন মসৃণ জিনিস কে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন তার মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কতো গর্ত বাঁ ছিদ্র রয়েছে। এটি যেমন 3rd Dimension এর বেলায় সত্য, ঠিক তেমনি 4th Dimension এর বেলায়ও সত্য। সময়ে অতি ক্ষুদ্র ছিদ্র আছে যা অনু পরমাণুর চাইতেও ক্ষুদ্র। যাকে “Quantum foam” বলা হয়। আর এখানেই “Wormhole” থাকে। যার মাধ্যমে আমরা টাইম ট্রাভেল করতে পারি। আমরা যদি একটি “Wormhole” কে ধরে বড় করতে পারি তবে হয়তো আমরা টাইম ট্রাভেল করতে সক্ষম হবো।
২০০৯ সালে স্টিফেন হকিং এক আজব কান্ডো
করে বসেন। তিনি টাইম ট্রাভেলারদের জন্য একটি পার্টির আয়োজন করেন।
তবে পার্টি শেষ হবার কিছুদিন পরে সেই পার্টির আমন্ত্রন পত্র বিতরণ শুরু করেন। যাতে
টাইম ট্রাভেলার কেউ সেই আমন্ত্রন গ্রহন করতে পারেন। যদিও সেই পার্টিতে কোন টাইম
ট্রাভেলার উপস্থিত হননি।
ধরুন আমরা বড় একটি “Wormhole” বানিয়ে ফেললাম যেটি আমাদের ২ মিনিট অতীতে নিয়ে যেতে পারে। এখন
আপনি এই “Wormhole”
দিয়ে অতীতে গিয়ে নিজেকে গুলি করে মেরে ফেলবেন ভাবছেন। যা ভাবা তাই কাজ, আপনি
গুলি করলেন, আপনার অতীত নিজেকে মেরে ফেললেন। এখন একটু ভাবুন তো, আপনার অতীত যদি না
থাকে তবে আপনি ভবিষ্যতে এসে গুলি চালাবেন কি করে? এই সব ব্যপার গুলোকে প্যারাডক্স বলা
হয়। যা বিজ্ঞানীদের কাছে দুর্স্বপ্নের মতো। হয়তো এই প্যারাডক্সের কারনেই স্টিফেন হকিং
এর পার্টিতে কোন টাইম ট্রাভেলার আসেননি। এই প্যারাডক্সের কথা চিন্তা করেই মনে করা
হয় অতীতে টাইম ট্রাভেল করা সম্ভব নয়।
আপনি যদি কোন রক কন্সার্টে গিয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন সেখানে কিছু চিইইই চিইইই শব্দ শোনা যায়। শিল্পী যখন গান গায় তখন সেই শব্দ মাইক্রোফোন দিয়ে এমপ্লিফাই হয়ে সাউন্ডবএক্স দিয়ে বের হয়। সেই শব্দ আবার মাইক্রোফোন দিয়ে এমপ্লিফাই হয়ে সাউন্ডবএক্স দিয়ে বের হয়। এভাবে লুপ চলতে থাকে। তবে এই ব্যপার সমাধান না করলে কিছু সময় পর সাউন্ড সিস্টেম নষ্ট হতে পারে। ঠিক একই ব্যপার “Wormhole” এর বেলায়ও ঘটতে পারে। বড় “Wormhole” তৈরি করলে ভবিষ্যৎ থেকে রেডিয়েশন অতীতে চলে যেতে শুরু করবে। এই লুপ চলতে চলতে এক সময় “Wormhole” ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই ভাবা হয় এতো বড় আকারে “Wormhole” তৈরি করা সম্ভব না। তবে কি ক্ষুদ্র “Wormhole” গুলো নেই? অবশ্যই আছে তবে সেগুলো খুব কম সময় পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
অতীতে টাইম ট্রাভেল সম্ভব না হলে কি ভবিষ্যতেও সম্ভব না?
সেটা নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা করা যাবে।
কোন মন্তব্য নেই